
ঠাকুরগাঁয়ে এক বিরল প্রজাতির প্রাণী ধরা পড়েছে গ্রামবাসীর হাতে। এর নাম নীল গাই। অন্য অনেক প্রাণীর মত আমাদের দেশে এটিও বিলুপ্তপ্রায়।
গতকাল মঙ্গলবার (০৪ সেপ্টেম্বর) নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে আবু জাহিদ নামে একজন এটিকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেন। পরে সবাই মিলে ধাওয়া দিয়ে পশুটিকে ধরতে সক্ষম হন।
এ সময় নীলগাইটির সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে বুধু ও মকবুল নামে দুই যুবক আহত হয়েছেন। জাহিদ নামে অপর এক যুবকের বাড়ি নিয়ে এটিকে বেঁধে রাখা হয়।
প্রাণীটিকে ধরার পর উৎসুক গ্রামবাসী এটিকে দেখতে ভিড় জমায়। আগত বয়োজ্যেষ্ঠরা হরিণ এবং গরুর মাঝামাঝি দেখতে প্রাণীটিকে নীলগাই বলে শনাক্ত করেন।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরোজা বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নীলগাইটিকে যদুয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় উদ্যানে পাঠানো হয়েছে।
ঠাকুরাগাঁও জেলা প্রশাসক আখতারুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, নীলগাইটি এলাকাবাসী আটক করার সময় কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঠাকুরগাঁওয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় উদ্ধারকৃত পশুটিকে দিনাজপুর জাতীয় উদ্যানে পাঠানো হয়েছে। নীলগাইটি সুস্থ হলে পরবর্তীতে সেটিকে কোথায় পাঠানো হবে তা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা গেছে, নীলগাইটি ৩-৪ মাস ধরে সদর উপজেলার রহিমানপুর পটুয়া এলাকায় বসবাস করছিল। স্থানীয়দের ধারণা নীলগাইটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফসল নষ্ট করায় সকলে মিলে অনেক চেষ্টা করে নীলগাইটিকে আটক করে।
নীলগাইটির উচ্চতা সাড়ে তিন ফুট। আর দেহের দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এটি একটি স্ত্রী নীলগাই।
দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড়ের মাঠে-ঘাটে একসময় নীলগাইয়ের দেখা মিলত। এখন বাংলাদেশে বিলুপ্ত। স্ত্রী নীলগাই লালচে বাদামি। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ নীলচে ধূসর। জ্যোৎস্নারাতে এরা দল বেঁধে মাঠে ঘাস বা ডালজাতীয় তৃণ খেতে বের হয়।
কালের বিবর্তনে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে বহু প্রাণী। অথচ একটু রক্ষণাবেক্ষনের চেষ্টা করলেই এদের টিকিয়ে রাখা যেতো। আমাদের প্রশাসনের উচিৎ এসকল বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়া প্রাণীদের টিকিয়ে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। এরা প্রকৃতির সম্পদ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply