
দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর, পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান ওরফে এসপি মিজানের আয় বহির্ভুত বিশাল সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। তার স্ত্রী সালমা আক্তার ওরফে নীপার বিরুদ্ধেও মামলা করেছে দুদক। মিজানুর রহমান ঢাকার রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) কমান্ড্যান্ট (বদলির আদেশাধীন)।
বুধবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা দু’টি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ। তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বিষয়ট নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মিজানুর রহমান ১৯৮৯ সালে সার্জেন্ট (এসআই) হিসেবে তৃতীয় শ্রেণির পদে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। পরে ১৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে যোগ দিয়ে বর্তমানে পুলিশ সুপার পদমর্যাদায় কর্মরত আছেন।
এ সময়ে তিনি নিজ নামে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৮ শতাংশ জমিতে দ্বিতল বাড়ি ও ১ হাজার ২৯৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ কৃষিজমি, ঢাকার তেজকুনিপাড়ায় ১ হাজার ৭১৮ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটের অর্ধেক অংশ, জুরাইনে একটি দোকান, ঢাকায় ১৫ শতাংশ জমি, রাজউকের উত্তরা তৃতীয় ফেজে ৩ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া দু’টি মাইক্রোবাস, আসবাব, ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর), ইলেকট্রনিকস, মেয়ের নামে শেয়ার, হাতে ও নগদে প্রায় দুই কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন।
মিজানুর রহমানের স্ত্রী নীপা মিজানের নামেও রয়েছে বিশাল সম্পদ। এজাহারে বলা হয়, ২০০৩ সালে মিজানুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় নীপার। একজন সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হয়ে স্বামীর ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে রেজিস্ট্রিভুক্ত কেরানীগঞ্জে একটি সার কারখানার মালিক হন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার মিরপুর মাজার রোডে ৫ কাঠা জমির ওপর তিন তলা ভবন, ঢাকার কেরানীগঞ্জে ১০ শতাংশ জমিতে দুইতলা বাড়ি, ঢাকা ও কেরানীগঞ্জে ৬৬ শতাংশ জমি, মিরপুর মাজার রোডে ২ কাঠা জমিতে দোকান, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৫৩৮ শতাংশ জমি, তেজকুনিপাড়ায় ১৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। এ ছাড়া ব্যবসায়িক মূলধন, হাতে নগদ অর্থসহ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বিপুল পরিমাণ।
আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতি পূর্ণ এই অর্থের উৎস কোথায়, সেটির খোঁজেই তদন্তে নেমেছিলো দুদক। সঙ্গতি না পাওয়ায় আইন অনুযায়ী মামলা দেয়া হয়েছে। এর চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে দুদককে। দেশে এখনও বহু প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তারা রয়েছে যাদের আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির কোনো সঙ্গতি নেই। এদেরকে একে একে বিবারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply