
হাতে লেখা অব্যাহতিপত্রে রনি অব্যাহতি নেয়ার প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, পিতা মুজিবুরের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আমি স্বজ্ঞানে অব্যাহতি নিলাম।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন নুরুল আজিম রনি।বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর অব্যাহতিপত্র প্রেরণ করেন তিনি।
একান্ত ব্যক্তিগত কারণে রনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। নগর ছাত্রলীগের জৈষ্ঠ সাধারন সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন। অব্যাহতি পত্রটি রনি তার ফেসবুক আইডিতেও পোষ্ট করেন।
এদিকে নগর ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রনির নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিব্রত। সর্বশেষ কোচিং সেন্টারের মালিককে মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রীয় সংগঠন রনিকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
ছাত্রলীগের এ নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে বহিষ্কারের আদেশ পাওয়ার আগেই রনি অব্যাহতি নিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে রনি’র মুটোফোনে একাধিকবার ফোন করেও মোবাইল বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে কোচিং ব্যবসায়ী রাশেদ মিয়াকে মারধরের বিষয়ে নগরে ছাত্রলীগ নেতা রনি গনমাধ্যমে তার বক্তব্য পাঠিয়েছেন প্রেস রিলিজের মাধ্যমে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রনি বলেন, আমি নূরুল আজিম রনি এবং মো: রাশেদ মিয়া দীর্ঘ পরিচয়ের সূত্র ধরে বিগত দেড় বছরের অধিক সময় যাবত জিইসি মোড়ের এমসিএইচ কোচিং সেন্টার ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং ইউনিএইড যৌথ অংশীদারিত্বে পরিচালনা করে আসছি। উক্ত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেন রাশেদ মিয়া নিজে দায়িত্ব পালন করতো। বিভিন্ন সময়ে আর্থিক লেনদেনের গড়মিল দেখতে পেলে আমি বন্ধুত্বের খাতিরে এড়িয়ে যেতাম। সম্প্রতি মধ্যে সিএমপির সাবেক ওসি আজিজ আহমেদের সাথে আর্থিক লেনদেন নিয়ে তার বিরোধ হলে আমার কাছ থেকে দুই চেকের মাধ্যমে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা লোন হিসাবে গ্রহণ করেছিলো রাশেদ খান।
দীর্ঘ এক বছর এই অর্থ পরিশোধ না করলেও আমি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারনে তার সাথে এসব নিয়ে বিরোধে জড়ায়নি। ইতোমধ্যে বিগত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোচিং এর অফিস রুমের কম্পিউটারে কাজ করার জন্য প্রবেশ করতে গিয়ে দেখতে পাই জনৈক এক ব্যক্তি নিচ তলার একটা অংশে স্কুলের শিক্ষার্থীদের কোচিং ক্লাস নিচ্ছেন। এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার কথা থাকলেও তিনি কেন ক্লাস নিচ্ছেন তার জবাব চাইতে রাশেদকে ফোন করি। রাসেদ পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি কোচিং সেন্টারে এসে আমাকে জানায় নিচ তলার একটা ফ্ল্যাট সেঙ্গুইন প্লাসের এক শিক্ষককে ভাড়া দিয়েছেন।
অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠানে আমার অজ্ঞাতে অন্য ব্যাক্তির কাছে ভাড়া দেয়ার কারণ জানতে চেয়ে রাশেদের সাথে আমার ঝগড়া-বিবাদ হয়। বিবাদের এক পর্যায়ে দুজনেই খুব উত্তেজিত ছিলাম এবং অপ্রীতিকর কিছু ঘটনা ঘটে। যেহেতু দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছিলাম সেহেতু বিষয়টি ওই রাতেই নিজেরা মীমাংসা করে ফেলেছিলাম। বিগত দুই মাস এ নিয়ে কোনও অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করা হয়নি।
বিগত ১০ তারিখ আমার কাছ থেকে লোন নেয়া সাড়ে নয় লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিলো রাশেদের। ১৩ তারিখ রাত পাওনা টাকার ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে সে আমার কাছে উপস্থিত হয়েছিলো। বাকী টাকা ফেরতের কথা বললে সে জানায় সে পালিয়ে যাবেনা পরদিন বাকী টাকা ফেরত দিয়ে দেবে। অথচ এ ক’দিন সে মোবাইল বন্ধ রেখে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) চকবাজার এলাকার এক কথিত যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনুকে সাথে নিয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা আ জ ম নাছির উদ্দিনের সাথে দেখা করেন।
পরে সেখান থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও চকবাজারের কথিত যুবলীগ নেতা নূর মোস্তফা টিনু কে সাথে নিয়ে পাঁচলাইশ মডেল থানায় এসে একটি অভিযোগ করেন। বিগত দুই মাস আগের একটু ভিডিও (১৭ ফেব্রুয়ারি) এসময় গনমাধ্যমের কাছে সরবরাহ করে বিভ্রান্তিকর একটি পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই,অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠানে আর্থিক লেনদেন নিয়ে নিজেদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। নিজেদের প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া নিজেদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাকে পুঁজি করে এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এ প্রতিবাদ জানাই এবং এ-সংক্রান্ত বিষয়ে গণমাধ্যমকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply