
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান পারভেজ সরকারকে শুক্রবার দুপুরে অপহরন করা হয়। জানা যায়, রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার মিনার মসজিদ থেকে জুমার নামাজ আদায় করে বের হওয়ার পর তাকে একটি পাজেরো গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
অপহরণের ১০ ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়ক এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার ভরদুপুরে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, রাত ১১টার দিকে পারভেজ নিজেই তার পরিবারের সদস্যদের ফোনে জানান, তিনি ভালো আছেন। তার অবস্থান ৩০০ ফুট এলাকায়। পরে তার আত্মীয়রা তাকে উদ্ধার করে। ডিসি আরও জানান, অপহরণ এবং উদ্ধারের বিষয় নিয়ে এখনও তাকে জিজ্ঞেস করতে পারিনি। তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া চলছে।
বিপ্লব কুমার জানান, যে গাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতাকে তুলে নেয়া হয়েছে ওই গাড়ির পেছনের নম্বরটি সঠিক নয়। পারভেজ সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন (তিতাস-হোমনা) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা উত্তরের সভাপতি।
পারভেজ সরকার ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিতাস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে লালমাটিয়া সি-ব্লকের ৩০ নম্বর বাড়িতে থাকেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে মিনার মসজিদ থেকে জুমার নামাজ পড়ে কয়েক গজ দূরে লালমাটিয়ার সি ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কে নিজ বাসার দিকে যাচ্ছিলেন পারভেজ।
বাসার গেটের সামনে যাওয়ার পর প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি তার সঙ্গে করমর্দন করেন। এ সময় লম্বা চুলের আরেক ব্যক্তি পেছন থেকে এসে পারভেজ সরকারের মুখ চেপে ধরেন। ঠিক ওই সময় পেছন দিক থেকে কালো রঙের একটি পাজেরো সামনে আসে। ধস্তাধস্তির পর পারভেজকে জোরপূর্বক গাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পারভেজ সরকারের খালাতো ভাই ফাহাদ ভূঁইয়া বলেন, তার ভাইকে অপহরণের সঙ্গে চারজন জড়িত। এদের সবার হাতে পিস্তল ও ওয়াকিটকি ছিল। দুজন বাইরে ও দুজন গাড়ির ভেতরে ছিলেন। অপহরণকারীরা দীর্ঘ সময় ধরে পারভেজ সরকারকে অনুসরণ করছিল।
পারভেজ হোসেনের স্ত্রী তাহমিনা আফরোজ মৌসুমী বলেন, ‘জুমার নামাজের আজান দেয়ার পর তিনি কালো পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা পরে নামাজের জন্য বের হন। নামাজের পর নিচে লোকজনের হট্টগোল শুনে এগিয়ে গিয়ে জানতে পারি আমার স্বামীকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে।’
ঘটনাস্থলের সামনে একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে। তাতে দেখা গেছে, যে পাজেরোটিতে তাকে তুলে নেয়া হয়, সেটির নম্বর প্লেটে লেখা ছিল ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৪-২৫৭৭।
অপহরণের পেছনে বড় কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিৎ তদন্তের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা, এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply