
কামরান আহমেদ রাজীব কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ বাংলা সাহিত্য সৌধের কালজয়ী প্রতিভা, বাঙালির সৃজন-মননে দীপ্তমান কৃর্তি পুরুষ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী তার স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ ২৫ বৈশাখ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা। শতবর্ষ ধরে বিশ্বকবির অনন্য প্রতিভার আলো উদ্ভাসিত করে চলেছে বাঙালির জীবন ও দর্শন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষাকে পরিচিত করেছেন বিশ্ব দরবারে। নিভৃত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল শিলাইদহে কবির জীবনের বেশ কিছু সময় কেটেছে তাঁর লেখনির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে এ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সেই স্মৃতি বুকে ধারন করেন আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। চির জাগরুক, বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের অন্যতম মহানায়ক, কাব্যগীতির শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা, দ্রষ্টা ও ঋষিতুল্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীতে কুষ্টিয়ার শিলাইদহকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানমালার বাইরেও এখানে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা। প্রায় সপ্তাহব্যাপী চলবে এ মেলা। দোকানীরা মেলায় হরেক রকমের পণ্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে। কবি পদধুলির শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়ায় এ এলাকার সাহিত্য-সাংস্কৃতিকমনা মানুষ হতাশ হলেও লাখো মানুষের ঢল নামবে এই শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে। মিলন মেলায় পরিনত হবে ঠাকুরবাড়ীর চত্বর।স্থানীয় প্রশাসনের দক্ষ আয়োজনে কবি আঙিনার সবদিক টইটুম্বর হয়ে উঠবে উৎসুকদের পদভারে। এই অনুষ্ঠানের সময় ঠাকুরবাড়ী বন্ধ থাকলেও দর্শকরা আসে মূলত: কবিকে স্মরণ করতে। দেশ-বিদেশের শত-শত দর্শনার্থী ও পর্যটকরা আসবেন শিলাইদহের এই কবি পাদপীঠে।
কুমারখালীর নিভৃত পল্লীর এই শিলাইদহে কুঠিবাড়ী শুধু গ্রামকে শহর সাদৃশ্যই করেনি, পাল্টে দিয়েছে এখানকার মানুষের জীবন যাত্রা। এখানে স্থানীয়দের চেয়ে এখন বাইরের মানুষেরই বেশী আনাগোনা থাকে। তবে এখনও সেভাবে ভাল পর্যটক আকর্র্ষণীয় হোটেল ও রেস্তোরা গড়ে ওঠেনি। যেখানে দিন বদলের সাথে-সাথে কিছুটা হলেও উন্নয়ন কর্মকান্ড চোখে পড়ে। বর্তমান সাংস্কৃতিমনা সরকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শিলাইদহের কুঠিবাড়ী পদ্মানদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে কয়েকশত কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে চলছে এই বাধ নির্মাণের কাজ। শেষ হবে খুব শীঘ্রই। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষ গণ নাটোরের জমিদার পরিবারের কাছ থেকে শিলাইদহের জমিদারী ক্রয় করে নিয়েছিলেন। জমিদারী পরিচালনার জন্য রবীন্দ্রনাথ যুবক বয়সেই এই শিলাইদহের নীল কুঠিতে আসেন। পদ্মার ভাঙনে কুঠি ভবনটি বিধ্বস্ত হলে ১৮৯২ সালে ১৩ বিঘা জমির উপর বিস্তৃত ৬ বিঘা জমি পাঁচিল দিয়ে ঘেরাও করেন। এই কুঠিবাড়ীতে বসেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গান রচনা করতেন। জমিদারী পরিচালনার জন্য তিনি দীর্ঘকাল এখানে কাটান।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply