
আজ ১০ জানুয়ারি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিন দুপুরে (১টা ৪১ মিনিটে) বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। ৮ জানুয়ারি মুক্তিলাভের পর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান থেকে প্রথমে লন্ডন এরপর দিল্লি হয়ে এই দিন ঢাকায় আসেন। নাটোরে জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ রাজনৈতিক দল দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। নাটোরে সকাল ৮ টায় কান্দিভিটুয়াস্থ আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্প মাল্য এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধু সহ তাঁর পরিবারের এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সহ-সভাপতি ও পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুর্তাজা আলী বাবলু, দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাসসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
দীর্ঘ ৯ মাস ১৪ দিন পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে বন্দিজীবন শেষে ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির পিতা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও প্রকৃতপক্ষে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বিজয়ের পূর্ণতা লাভ করে। অবিস্মরণীয় এ দিনে তিনি জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বিপুলভাবে বি সকাল দলীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এ ছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনের সব সহযোগী সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ফিরে দেখা : ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙালি জাতি ‘মুক্তির সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এর মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। তবে দেশব্যাপী শুরু হয় স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রবাসী সরকার তার (বঙ্গবন্ধুর) নির্দেশনা অনুসরণ করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এএইচএম কামরুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকাকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সামরিক বেসামরিক ব্যক্তিবর্গকে
দায়িত্ব প্রদান করেন। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ আরও তীব্র হয়। জয় যখন সময়ের ব্যাপার সেসময় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয়। বিশ্ব নেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তানি বর্বর শাসকগোষ্ঠী তাকে (বঙ্গবন্ধুকে) সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে। জাতির জনক পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে (ইংরেজি হিসাবে ৮ জানুয়ারি)। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন, ব্রিটেনের
প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দীন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন। দশ তারিখ সকালে তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, প্রধান নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিব। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’ বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকেল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায়
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply