
বর্ষাকালে নিম্নাঞ্চল ডুবে বন্যার সৃষ্টি হওয়া আমাদের দেশে প্রতি বছরের স্বাভাবিক দৃশ্য হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে সাধারন মানুষ এবং উক্ত অঞ্চলে বসবাসরত লোকজন।
এবারও পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীগুলোর পানি এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
এভাবে পানি বাড়তে থাকলে উত্তরাঞ্চলে বড় আকারে বন্যার আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। উত্তরাঞ্চলের নদীগুলোর উপচে পানি পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
এরপর পর্যায়ক্রমে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ২০ থেকে ২৫টি জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
সবচেয়ে ঝুকিতে রয়েয়ে পঞ্চগর, লাটমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা জেলাগুলো। এছাড়াও শেরপুর, জামালপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলাও বন্যার আওতাধীন রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যনুসারে, বৃহস্পতিবার থেকে ধরলা নদীতে ৬ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্ম নদের চিলমারী পয়েন্টে ২২ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৫ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে ২৮ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের পরিবারগুলো বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
তিস্তার পানির সঙ্গে করোতোয়ায় পানি বাড়তে থাকায় পঞ্চগড়ের অনেকস্থানে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। কুড়িগ্রামে ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি দ্রুত গতিতে বাড়ছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
তিস্তা ব্যারাজ কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, ব্যারাজের উজানে ও ভাটিতে পানি প্রবাহ চলছে ৫৩ মিটার। যা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সঙ্গে লাগানো পূর্ব প্রান্তের গেজে ৫৩ মিটার পর্যন্ত পানির লেবেল উঠতে দেখা গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানিয়েছেন, ‘জেলায় এখনও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তারপরও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় যেকোনও ধরনের সহায়তার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।’
বন্যা ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের যেটা করনীয় সেটা হলো, ক্ষয়ক্ষতি কমাবার চেষ্টা করা। সাধারন মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এছাড়া এই সময়ে তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যেন কোনো রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে না পড়ে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply