
বিভিন্ন সময়ে ছোট ছোট বিভিন্ন পাখি হটাৎ করে বিমানের ককপিটে ঢুকে যাওয়ার কারনে বিমানের জরুরি অবতরন করা হয়েছে। এ রকম শিরোনাম আমরা প্রায় ই দেখে থাকি। পাখির চেয়েও অতি ক্ষুদ্র জীব মশা এবার বিমানের উড্ডয়ন আটকে দিল। ঢাকা শহরের বলতে গেলে সবচেয়ে ভয়ংকর এবং দাপটশীল এই প্রাণীর কারনে খোদ শিরোনাম হলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। গত বৃহস্পতিবার মালয়সিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ কে তার নির্ধারিত সময়ে উড্ডয়নে বাধা দেয়। মালয়শিয়ান এয়ারলাইন্সের এম এইচ ১৯৭ ফ্লাইট টি ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশ্যে রাত সাড়ে ১২ টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
১৫০ জন নিয়ে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ টি রানওয়ের দিকে রওনা দেয়। কিন্তু হটাৎ করে উড়োজাহাজের মধ্যে থাকা যাত্রীরা মশার কামড়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন। মশার কামড়ের বিষয়ে যাত্রীদের অভিযোগের পর উড়োজাহাজ টি আকাশে উড়ার ঠিক আগ মূহুর্ত তে পাইলট উড়োজাহাজ কে বে এরিয়ায় নিয়ে আসেন।
বে এরিয়ায় নিয়ে আসার পর শুরু হয় মশা নিধনযজ্ঞ।
কেবিন ক্রুরা মশা নিধনের স্প্রে ও ঔষুধ ছিটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় দুই ঘন্টা পরে পৌনে তিনটার দিকে উড়োজাহাটি মালয়শিয়ার উদ্দেশ্যে আকাশে ডানা মেলতে সক্ষম হয়। ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে এ ধরণের ঘটনা এইবার ই প্রথম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালয়শিয়ান এয়ারলাইন্সের স্টেশন ম্যানেজার আবদুল আজিজ বলেন, “যাত্রীরা মশার কারণে উড়োজাহাজে বসতে পারছিলেন না। তাঁদের অভিযোগের কারণে উড়োজাহাজটি ফিরে আসে। মশার কারণেই ফ্লাইটটি দুই ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে তিনি জানান।”
বিমান বন্দর সূত্রে জানা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে বছরের ১২ মাসের মধ্যে ৭ মাস ই থাকে মশার প্রচুর উপদ্রব। মশার উপদ্রব শুরু হতে থাকে অক্টোবর মাস থেকে। শীতের সময় মশার এই উপদ্রব তীব্র আকার ধারণ এবং সহ্য সীমার বাইরে চলে যায়। এপ্রিলে বৃষ্টি শুরু হলে মশার দাপট কমতে থাকে। মশার এই উপদ্রবের অন্যতম কারন হচ্ছে ১ হাজার ৯৭১ একর আয়তনের বিমান বন্দর এরিয়ার অর্ধেক জুড়ে রয়েছে ছোট বড় অনেক গুলো পুকুর। বর্ষার মৌসুমে মে -সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির কারনে জলাশয়গুলো পানিপূর্ণ হয়ে থাকে। কিন্তু যখন বর্ষা চলে যায় তখন এই সব পুকুর গুলো তে মশার বংশবিস্তার ঘটতে থাকে। দিনের আলো তে মশার উপদ্রব না থাকলেও রাতের বেলা বিমান বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনায় মশার উপদ্রবে থাকা কষ্ট দায়ক হয়ে যায়। বিশেষ করে কার্গো গুদামে মশার কারনে থাকা প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের একাধিক কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন,প্রচুর বৈদ্যুতিক আলো ও প্রবেশপথ খোলা থাকায় মূল টার্মিনালে সন্ধ্যার পরপরই মশা ঢুকে পড়ে। উড়োজাহাজ থেকে নামার পর মশার ঝাঁক যাত্রীদের রীতিমতো ঘিরে ধরে। রাতের বেলা মশার কামড় খেয়ে ছটফট করতে করতে যাত্রীদের চেক-ইনের কাজ করেন কর্মীরা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply