ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালী সময় ছিল কয়েক দশক আগে। বিশ্বের যাবতীয় শক্তিশালী দলগুলো পরাভূত হয়ে ফিরে যেত সে সময়ের ক্যারিবিয়ান দলের কাছে। সে সময়ই যেন ফিরে আনল বর্তমান দলটি।
কাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে প্রায় ১৩ ওভারের মতো টিকতে পেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৮৯ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। খোদ ক্যারিবীয় সমর্থকেরাই হয়তো ভেবেছিলেন, প্রথম ইনিংসে এ আর এমন কী স্কোর! ইংল্যান্ডও ভাবেনি কী অপেক্ষা করছে সামনে। ১ উইকেটে ৩০ রান মধ্যাহৃভোজনে গিয়েছিল সফরকারি দল। দ্বিতীয় সেশনে খেলা হয়েছে মাত্র ১৯.২ ওভার। সেটি অবশ্যই রোচের রুদ্রমূর্তির জন্য। ইংল্যান্ড যে এই সময়ের মধ্যেই হারিয়েছে বাকি ৯ উইকেট! এর মধ্যে রোচের একার শিকারই ৫ উইকেট। সেটিও মাত্র ৪ রান খরচায়, ২৭ বলের ব্যবধানে!
প্রথম সেশনে ইংলিশ ওপেনার কিটন জেনিংসকে ফেরান জ্যাসন হোল্ডার। দুই ওভার পরই মধ্যাহৃভোজনে যায় দুই দল। ক্রিকেটরসিকরা প্রশ্ন তুলতে পারেন, মধ্যাহৃভোজনে কি খেয়েছিলেন রোচ? কীভাবে এতটা তেতে উঠলেন? দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরুর পর প্রথম ওভারেই আরেক ওপেনার ররি বার্নসকে তুলে নিয়ে ধংস্বযজ্ঞের শুরু করেন রোচ। নিজের পরের ওভারে এসে গতি আর সুইংয়ের পসরায় ছেলেখেলা করেছেন জনি বেয়ারস্টোকে নিয়ে। ওই ওভারের পঞ্চম বলে বেয়ারস্টো শেষ পর্যন্ত বেঁচেছেন বোল্ড হয়ে!
মাঝে দুই ওভার বিরতির পর আবারও ধ্বংসযজ্ঞে মাতেন রোচ। ২০তম ওভারে পর পর দুই বলে ফেরান বেন স্টোকস ও মঈন আলীকে। ইংল্যান্ড ততক্ষণে ৬ উইকেটে ৪৮। এরপর জস বাটলারকেও তুলে নিয়ে ইংলিশ ব্যাটিং অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন এই পেসার। লেজের ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে অলআউট করার আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও আলজারি জোসেফ। রোচ একাই নিয়েছেন ১৭ রানে ৫ উইকেট। আর বাকি তিন পেসারের সম্মিলিত শিকার ৫ উইকেট। মাত্র ৭৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় ফলোঅনও এড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। ব্রিজটাউনে যা টেস্টে কোনো দলের সর্বনিম্ন ইনিংস। ইংল্যান্ডের এই ইনিংসের জেনিংসের রানসংখ্যা সর্বোচ্চ—১৭!
ইন্ডিজ অবশ্য ইংল্যান্ডকে আবারও ব্যাটিংয়ে পাঠায়নি। ২১২ রানের লিড নিয়ে স্বাগতিক দলই নেমেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে। খুব একটা ভালো অবশ্য করতে পারেনি। ৬ উইকেটে ১২৭ রানে তাঁরা শেষ করেছে দ্বিতীয় দিনের খেলা। তবে হাতে ৪ উইকেট রেখে স্কোরবোর্ডে এখনই ৩৩৯ রানের লিড, যা জয়ের সুবাস পাইয়ে দিচ্ছে ক্যারিবীয়দের।
মোট ১৮ উইকেট পতনের এই দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চালকের আসনে বসিয়েছেন রোচ। গত এক দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ নিয়ে চারবার প্রতিপক্ষ দলকে বেঁধে ফেলল এক শ রানের নিচে। ২০১৭ সাল থেকে হিসেব কষলে ইংল্যান্ড কিন্তু নেমে এসেছে বাংলাদেশের কাতারে। এই সময়ে শুধু এ দুটি দলই দুবার করে গুটিয়ে গেছে এক শ রানের নিচে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঠিক এই সময়ে প্রতিপক্ষকে তিনবার এক শ রানের নিচের বেঁধে ফেলেছে, যা সর্বোচ্চ সংখ্যকবার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply