
ডিম ছাড়তে মা ইলিশ ছুটে আসে পদ্মায়। ইলিশের এই প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে কিছুদিন। যাতে মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। এর ফলে বছরের অন্যান্য সময়টা বাজারে ইলিশের দাম কিছুটা হলেও স্থিতিশীল থাকা সম্ভব হয়।
তবে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকার। এ সব মা ইলিশ ও জাটকা ইলিশ স্থানীয়ভাবে বিক্রি হচ্ছে পানির দামে। সকাল-সন্ধ্যা পদ্মাপাড়ে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও স্বীকার করলেন তাদের অসহায়ত্বের কথা।
পদ্মা চরাঞ্চলের দুর্গম চর এলাকা সংলগ্ন পদ্মা নদীতে অনেকটা গোপনেই জেলেরা ব্যস্ত থাকে ইলিশ শিকারে। প্রশাসনের নাকের ডগায় চরাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে ডিম ভর্তি মা ইলিশ। অনেক সময় আবার প্রকাশ্য বাজারে ইলিশ বিক্রি করতে না পারায় খুবই সস্তায় জেলেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। এ সময় সুযোগ বুঝে পুলিশ জেলেদের ধরে এনে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে। পুলিশ তাদের ছেড়ে দিচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে। উদ্ধারকৃত মাছ এ পর্যন্ত কোন এতিমখানা বা লিল্লাহ বোর্ডিংএ দেয়া হয়নি।
তাহলে প্রতিদিন উদ্ধার হওয়া ইলিশ কোথায় যাচ্ছে? এদিকে স্বাভাবিক সময়ে যে ইলিশের বাজার মূল্য কেজিতে ৮শ’ থেকে ১হাজার টাকা; সেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দেড়শত টাকা দরে! এত সস্তায় ইলিশ পেয়ে স্থানীয় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ ভিড় করছে পদ্মা পাড়ে। ব্যাগ বোঝাই করে ইলিশ নিয়ে ফিরছে বাড়িতে! পদ্মাপাড়ে গেলে এ দৃশ্য সকাল-সন্ধা চোখে পড়ে।
সূত্র মতে, নিষিদ্ধ মৌসুমে ইলিশ শিকার বন্ধে অভিযান চালানো হয় পদ্মায়। তবে দুর্গম অঞ্চল প্রায় সময়ই অভিযানের বাইওে থেকে যায়। জেলেরা কৌশলে গভীর রাতে ও খুব ভোরে পদ্মার বিভিন্ন এলাকায় মাছ শিকার করে। সেক্ষেত্রে ইলিশের জাল নদীতে ফেলে কৌশলে জাল নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পানিতে লুকিয়ে রেখে মাছ শিকার করে বলেও জানা গেছে। জেলেরা চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি ও বন্দরখোলা এলাকার চর সংলগ্ন পদ্মানদীতে জেলেরা ইলিশ শিকার করে থাকে। চরাঞ্চলের এই পদ্মার পাড়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হয় ইলিশ। ইলিশ কিনতে আসা আসলাম জানান, ‘তিনি প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকা থেকে এসেছেন। পদ্মার পাড়ে সস্তায় ইলিশ পাওয়া যায়, এ খবর শুনে তিনি মাছ কিনতে এসেছেন। তার দিনমজুর পিতার পক্ষে অন্য সময়ে বেশি দামে ইলিশ কেনা সম্ভব হয় না। তাই সস্তায় একটু বড় ইলিশ কিনতে কষ্ট করে এ দুর্গম চরে এসেছেন।
এ সময়ে জেলেদের অসচেতনতায় ধরা ইলিশের দাম চুকাতে হয় বছরের অন্য সময়গুলোতে। বাজারের মূল্য বৃদ্ধি পায় অনেকাংশে। আমাদের জনসাধারনের উচিৎ এই কয়েকটা দিন ইলিশ খাওয়া থেকে বিরত থাকা। তবে জেলেরা আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে উৎসাহ পাবে না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply