
আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু হাওয়ার কোমল স্পর্শ–এটি বাংলাদেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর, প্রবাল কিংবা জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশ কেন্দ্র সেন্টমার্টিন। স্বচ্ছ পানিতে জেলি ফিশ, হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, প্রবাল বিশ্ব রহস্যের জীবন্ত পাঠশালায় পরিণত করেছে সেন্টমার্টিন ও তৎসংলগ্ন এলাকাকে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।
অথচ এই মনোরম সৌন্দর্যের প্রবাল দ্বীপ হয়তো আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম দেখতে পারবে না। কারণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী বায়ুতে প্রবল বেগে দমকাসহ ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে ও প্রবল বর্ষণে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন একটু একটু করে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। ঝড়ো হাওয়া ও মৌসুমী বায়ু প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সেন্টমার্টিনের বসবাসরত মানুষদের মনে সৃষ্টি হচ্ছে আতঙ্ক।এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হাবিব খান জানান, শুক্রবার (৬ জুলাই) রাত থেকে তুমুল বাতাস বয়ে চলছে আর মুষলধারে বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর এবং গাছপালা। যতই যাচ্ছে থেমে থেমে বাড়ছে বাতাসের গতিবিধি।
সাগর উত্তাল, বাড়ছে জোয়ারের পানি, তলিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি। এ কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন গোটা দ্বীপবাসী। দ্বীপ রক্ষার জন্য সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি। ভাঙন ধরেছে দ্বীপটির সব পয়েন্ট দিয়ে। লোনা হয়ে যাচ্ছে দ্বীপের প্রায় টিউবওয়েলের মিষ্টি পানি। একটু একটু করে প্রায় সাগর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে দ্বীপের একমাত্র কবরস্থান। দ্বীপের মুরুব্বিদের শতবছর আগের কবর জিয়ারত থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের উত্তরসূরিরা। বর্তমানে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৭/৮ নং সংকেত লাগে না। এখন প্রতি জোয়ারের আগ্রাসনে দ্বীপের ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। দ্বীপবাসীর এখন প্রাণের দাবি প্রতিনিয়ত দুর্যোগের এই গজব থেকে পরিত্রাণ চাই। দ্বীপবাসীর পক্ষ থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এশিয়ার একমাত্র প্রবাল দ্বীপ উপজেলার মাননীয় সাংসদ (উখিয়া-টেকনাফ) শাহীন আক্তার এমপি মহোদয়ের।
সেন্টমার্টিন দ্বীপটিকে হারিয়ে যাওয়ার আগে যত্ন নেয়া জরুরী মনে করছি।সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসাইন জানান, বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে সাগরের লোনাপানি ঢুকে শাহপরীরদ্বীপ ও সাবরাংয়ের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অনেকে বসতবাড়ি ছেড়ে টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply