
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বর্তমান সরকার থাকা অবস্থায়ই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোট এবং দলটির প্রাধান্য নিয়ে গড়া নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। সূত্র মতে, তারেকের ওই নির্দেশনার পরই গতকাল শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এ নিয়ে দুই জোটের শরিকদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছে। বৈঠকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বিএনপি তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানালে দুই জোটই নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।
ঐক্যফ্রন্টের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরবেন জোটটির শীর্ষস্থানীয় নেতা ড. কামাল হোসেন। গত রাতে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতাদের বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য জানান। বিএনপি মহাসচিব বলেন, রবিবার দুপুর ১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন ড. কামাল হোসেন।
এদিকে ২৩ দলের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, বৈঠকে মির্জা ফখরুল বলেছেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁরা নির্বাচনে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি সে রকম হলে প্রয়োজনে শেষ সময়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা হবে।
২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির বাতিল হওয়া নির্বাচনের আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পাঁচটি মনোনয়নপত্রই বাতিল ঘোষণা করেছিলেন আদালত। তখনই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহা ঐক্যজোট মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছিল। এর সূত্র ধরে পরে ‘এক-এগারোর’ আলোচিত ঘটনা ঘটে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন, চাপের মধ্যে থাকলেও কৌশলগত কারণে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। তাঁদের মতে, নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার চেয়ে অংশ নেওয়াই বেশি লাভজনক। দলটির একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও দুজন যুগ্ম মহাসচিব জানান, দলের অস্তিত্বের প্রশ্নেই বিএনপিকে অংশ নিতে হচ্ছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ার বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিএনপির পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দল সবাই নির্বাচন করবে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে যাব। তবে সরকার চাইছে না বিএনপি ও তাদের জোট নির্বাচনে যাক। গেলে তাদের অসুবিধা। ফলে এই অসুবিধা করার জন্যই আমরা নির্বাচনে যাব।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপির সিদ্ধান্তের ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করছে। তারা নির্বাচনে গেলে ঐক্যফ্রন্টও যাবে।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও সহসভাপতি তানিয়া রব জানান, সংগঠনগতভাবে তাঁদের দলের নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আছে। তবে তফসিল পেছানো এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। তফসিল পেছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানান তানিয়া রব।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রে দলটির পক্ষে সই করবেন দলের মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্মতি আগেই নেওয়া আছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রে ফখরুলেরই সই ছিল।
সূত্র মতে, বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ কেন্দ্রের ছোট একটি অংশ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে যেতে রাজি নয়। তারা নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনের পক্ষে থাকলেও ওই আন্দোলন সফল হবে কি না তা নিয়ে আবার সংশয় রয়েছে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে। ফলে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। জোটের শরিক অন্যান্য দল মূলত বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি ও ভোটারদের ওপরই নির্ভরশীল। ফলে তারাও নির্বাচনে যেতে রাজি হয়।
এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার আগে বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সম্মতি দরকার বলে মনে করছেন দলের নেতারা। সে অনুযায়ী কয়েক দিন ধরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা চলছে। গত শুক্রবার বিকেল ৩টায় জেল কর্তৃপক্ষ সাক্ষাতের সময়সূচি দিয়েছিল অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে। কিন্তু পরে কারা কর্তৃপক্ষ ওই সাক্ষাত্সূচি বাতিল করে দেয় বলে জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন। তবে আজ রবিবার বিকেলে
পরিবারের সদস্যদের খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। ওই সাক্ষাতের সূত্র থেকে বা অন্য কোনোভাবে তাঁর সম্মতি পাওয়া গেলে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।
জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য দলের মহাসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকালই ঢাকায় সবুজ সংকেত পাঠিয়েছেন। বিএনপির মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ সদস্যের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটি গঠন করে আসন বণ্টনের বিষয়টিও নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দিয়েছেন তারেক। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর এবং ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনেই আসন বণ্টনে কমিটির প্রধান ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। লন্ডনের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এবারও ওই কমিটির প্রধান তাঁকেই করা হচ্ছে।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আগামী ১৯ নভেম্বর। সে অনুযায়ী সময় রয়েছে আর মাত্র এক সপ্তাহ। তফসিল না পেছালে ওই সময়ের মধ্যেই শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিসহ বিএনপির দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নও চূড়ান্ত করতে হবে। কাজটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের বলে মনে করছেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপি ও জোটের সূত্র মতে, গতকালের তিনটি বৈঠকেই নির্বাচনের তফসিল, বিশেষ করে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমা অত্যন্ত কম বলে মত প্রকাশ করেন উপস্থিত নেতারা। তাঁরা বলেন, ১৯ নভেম্বরের মধ্যে আসন বণ্টন নিষ্পত্তি করে মনোনয়নপত্র দাখিল করা খুবই কঠিন। পরে সিদ্ধান্ত হয়, মনোনয়নপত্র দাখিলে সময় বাড়ানোর পাশাপাশি তফসিল পেছানোর জন্য ইসিতে চিঠি পাঠানো হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয় গতকাল বিকেলে। পরে সন্ধ্যায় ২০ দলীয় জোটের এবং রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
প্রতীক নিয়ে ইসিতে চিঠি আজ : ২৩ দলীয় জোটের বৈঠকে থাকা এক নেতা জানান, বেশির ভাগ নেতাই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁরা বলেন, সরকারকে কোনোভাবেই ‘ওয়াকওভার’ দেওয়া যাবে না। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ না নিলে জোটের বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখাও কঠিন হবে। ওই নেতা আরো জানান, বৈঠকের শুরুতে বিএনপির মহাসচিব বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি, জোটপ্রধান কারাগারে, তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জোটের করণীয় জানতে চান তিনি। প্রায় প্রতিটি দলের প্রতিনিধিই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে
ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। তবে তিনটি দল নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। দল তিনটি হচ্ছে—বিজেপি, ইসলামী ঐক্যজোট ও ডেমোক্রেটিক লীগ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে অংশ নিলে কোন দল নিজ প্রতীকে আর কোনো দল জোটের মধ্যে থেকে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নেবে সে প্রসঙ্গও আলোচনায় আসে। যারা জোটের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তাদের আজ রবিবার দুপুরের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এসব চিঠি সংযুক্ত করে বিএনপির প্যাডে আরেকটি চিঠি পাঠানো হবে ইসিতে। ওই চিঠিতে ‘যদি জোট নির্বাচনে অংশ নেয়’ এমন কথা উল্লেখ করে প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
এক দিন সময় চায় জামায়াত : জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন স্থগিত থাকায় দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রতীকে না কি জোটের অন্য কোনো দলের প্রতীকে অংশ নেবেন সেটি পরিষ্কার করেনি। জানা যায়, বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি আব্দুল হালিম বলেন, তাঁরা এক দিন সময় চেয়ে নিচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাঁরা জানিয়ে দেবেন।
২৩ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ অবশ্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের বৈঠকে দেশের নির্বাচন ও দেশে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে যাব কী যাব না এ ব্যাপারে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আগামী দুই দিনের মধ্যেই ২০ দলীয় ঐক্যজোট ও জাতীয়
ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করব।’ তিনি বলেন, ‘জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি হলো আমাদের প্রাধান্য, তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এলডিপি প্রধান বলেন, ‘আমরা যারা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এই জোটে আছি তারা কমিশনের কাছে চিঠি লিখব। চিঠির ভাষা এমন হবে যে যদি আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি সে ক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রতীকে অনেকে নির্বাচন করবে। আবার অনেকে ২০ দলের মূল দল বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবে, যদি আমরা নির্বাচন করি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, ‘যদি নির্বাচনে যাই আমি আমার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করব।’
বিএনপির বৈঠকে বাদানুবাদ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, গতকালের বৈঠকে নির্বাচনে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তাঁরা বলেন, এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া মানেই সরকারের ইচ্ছা পূরণ করা। সংলাপে কোনো দাবি না মানার পরও এই নির্বাচনে অংশ নিলে তা হবে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন। ওই সময় মওদুদ আহমদ তাঁদের থামিয়ে দেন। জবাবে গয়েশ্বর বলেন, ‘কথাও বলা যাবে না!’ পরিবেশ উত্তপ্ত হওয়ার আগেই মওদুদ বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ম্যাডামের সঙ্গে আলোচনা করতে সময় চাওয়া হয়েছে। মহাসচিব যাবেন, সম্ভব হলে সেখানে যেন তাঁরাও যান। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত আসবে।’
বৈঠক থেকে বেরিয়ে ব্যারিস্টার মওদদু আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আজ বিএনপির মহাসচিব বৈঠকের আলোচিত বিষয় ও সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানাতে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
কাল ইসিতে যাবে ঐক্যফ্রন্ট : নির্বাচনে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে আগামীকাল সোমবার ইসিতে যাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমান পরিস্থিতি ও তাদের দাবি তুলে ধরতে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ইসিতে যাবেন এবং একটি চিঠি হস্তান্তর করবেন। সেই চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে চিঠিতে বলা হবে।
কূটনীতিকদের কাল ব্রিফ করবে বিএনপি : দলটির কূটনৈতিক উইং সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকদের আগামীকাল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ব্রিফ করবে বিএনপি। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংলাপের বিষয়বস্তু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতির বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হবে।
সূত্র মতে, দুই দফা সংলাপে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, নতুন মামলা না করা এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জোর দেবে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণসংবলিত কিছু কাগজপত্র কূটনীতিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির আহ্বায়ক ইনাম আহমেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কূটনীতিকদের ব্রিফ করি। আগামী সোমবারও ব্রিফ করব। চলমান রাজনৈতিক ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলব।’
দুপুরে ড. কামালের সংবাদ সম্মেলন : গত রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতাদের বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব আজ দুপুর ১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ড. কামাল হোসেন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বলে জানিয়েছেন। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় নেতা ড. কামাল শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত রাতের বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। তাঁর অনুপস্থিতিতে মির্জা ফখরুল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, মোকাব্বির খান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাহিদ উর রহমান, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে আমরা সব সময়ই ইতিবাচক। বৈঠকে অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।’
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply