
আজ সহ ছয়দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৪৭ জন সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আবারও ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। এই বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। তারা মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভজন দাস, নেত্রকোনা : চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে নেত্রকোনায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে জেলা সদরের মদনপুর ইউনিয়নের মনাং বাজার বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পাইপগান ও বিপুল পরিমাণ হেরোইন, ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বোরহান উদ্দিন খান বলেন, মদনপুর ইউনিয়নের মনাং বাজার বাগান এলাকায় মাদক কেনাবেচা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। আহত হয় তিন পুলিশ সদস্য।
ঘটনাস্থল থেকে দু’টি পাইপগান ও ৭০৫ গ্রাম হেরোইন, তিন হাজার পাঁচ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। লাশ দুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আইয়ুব আলী, ময়মনসিংহ : শহরের পুরোহিতপাড়া রেল কলোনি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রাজন নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ৪০০টি ইয়াবা, তিনটি গুলির খোসা, দুটি ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আশিকুর রহমান এবং কনস্টেবল কাওছার গুরুতর আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি মো আশিকুর রহমান জানান, নিহত রাজন ময়মনসিংহের শীর্ষ মাদক সম্রাট। তার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ কোতয়ালী মডেল থানায় মাদকসহ ৯টি মামলা রয়েছে। ওসি আরো জানান, শহরের পুরোহিত পাড়া রেলওয়ে কলোনি এলাকায় ময়মনসিংহের শীর্ষ মাদক ব্যাবসায়ী আলালসহ এলাকায় কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকের চালান ভাগাভাগি করছিল। গোপনে খবর পেয়ে রাত পৌনে ২টায় সেখানে অভিযান চালায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে গুলি চালায়। পুলিশও আত্নরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে।
এ সময় রাজন গুলিবিদ্ধ হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ রাজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইকরাম চৌধুরী টিপু, কক্সবাজার : মহেশখালীতে সন্দেহভাজন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে মোস্তাক আহামদ (৩৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাত ১০টার দিকে বড়মহেশখালী ইউনিয়নের দেবেঙ্গাপাড়া পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোস্তাক আহামদ মুন্সিরডেইল গ্রামের বাসিন্দা।
মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, দেবেঙ্গাপাড়া পাহাড়ি এলাকায় ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের দুই পক্ষের গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। পুলিশের সঙ্গে আধা ঘণ্টা গোলাগুলির একপর্যায়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা ব্যবসায়ী মোস্তাকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এসময় এক হাজার ইয়াবা, চারটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, সাতটি গুলি ও ৩০টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। নিহত মোস্তাক ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। এর আগে ভোরে কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ হাসান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে, গতকাল রাত ৯টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আকতার কামালকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক পরিচয়ে আটক করেছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। টেকনাফ থানার পুলিশ জানিয়েছে, আকতার কামাল ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
মাদকের থাবায় দেশের যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর আশু সমাধান প্রয়োজন। এজন্যে মাদক সম্রাট নামে খ্যাত ব্যবসায়ীদের ধরে আইন ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply