
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে যাকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বরপুত্র বা রাজপুত্র বলা হয়। আর সেই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের রাজপ্রাসাদ ছিলো তারেকের নিয়ন্ত্রণাধীন হাওয়া ভবন। বর্তমানে লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছে। বুধবার (১০ অক্টোবর) সকালে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের দুই মামলায় এই রায় ঘোষণা করেন। এর আগেও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় সর্বনিম্ন সাত বছর সাজা ও তার মায়ের সঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড হয়েছে ১০ বছরের।
বাংলাদেশের পেনাল কোড অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে তার সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন। গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে তারেক জিয়ার জড়িত থাকার কথা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ হওয়ায় তারেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তারেকের ফাঁসি না হওয়ায় ভুক্তভোগী, নিহতদের পরিবার ও আওয়ামী লীগ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নৃশংস গ্রেনেড হামলার প্রধান রূপকার হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার প্রত্যক্ষ মদদেই ওইদিন যুদ্ধে ব্যবহৃত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে সৌভাগ্যক্রমে শেখ হাসিনা আহত অবস্থায় বেঁচে গেলেও ২৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।
তারেক যাবজ্জীবন সম্পর্কে তৃণমূল বিএনপির একজন কর্মী জানায়, ‘তারেক রহমানের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের কথা আগেও অনেক শুনেছি তবে তা বিশ্বাস করি নি। দলের সকলেই তার প্রশংসা করে তাই আমিও তার সম্পর্কে ভালই জানতাম। তবে ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার রায়ে তারেক জড়িত থাকার কথা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ হওয়ায় আমার সে ভুল ভাঙ্গে। একটি রাজনৈতিক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হয়ে কি ভাবে আরেকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে পারে ? তারেকের মত এমন একজন দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীর দল করতাম মনে হয়ে লজ্জা হচ্ছে।‘
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের যাবজ্জীবন হওয়ায় ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তাকে বিপজ্জনক ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
যাবজ্জীবন প্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড হলে বিদেশে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম (রাজনৈতিক আশ্রয়) দেওয়া হয়। তবে তারেকের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া সমর্থন করে না। তাই তাকে ফিরিয়ে আনতে কষ্ট হবে না।’
তারেক ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে লন্ডনে যায়। পরে তার জামিন বাতিল করে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি না আসায় আদালত বিভিন্ন মামলায় তাকে পলাতক হিসেবে রায় দিয়ে এসেছে। গত ১০ অক্টোবরও তাকে পলাতক দেখিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন এখন থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামী।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply