
রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই আশ্বাস দেন।
রোহঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় এই সংস্থাটি শুরু থেকে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশ সফররত সুইং সংস্থার ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিষম চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেছেন আইওএম মহাপরিচালক। তিনি বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ বাসভূমে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে। এক্ষেত্রে তাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে।”
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত বছরের অগাস্টে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে।
আগে থেকে ৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল; এই দফায় আরও সাত লাখ আসার পর শরণার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মিয়ানমার সরকার বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে শরণার্থীদের ফেরত নিতে গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। তবে এরপর আর অগ্রগতি নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন আগেই বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করলেও বাস্তবে মিয়ানমার কোনো কাজ করছে না।
সম্প্রতি কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে ঘুরে সরেজমিন পরিস্থিতি দেখে এসেছেন আইওএম মহাপরিচালক।শেখ হাসিনা তাকে বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, তা করা হবে।
শরণার্থীদের অন্য স্থানে নিয়ে উন্নত আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশেষ করে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলা এবং শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে।
বৈঠকে আইওএমের মহাপরিচালকের সিনিয়র উপদেষ্টা ওয়েন লি, সংস্থাটির শরণার্থী সেল ইউনিটের প্রধান পেপপি সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমার যাতে তার নাগরিকদের ফেরৎ নেয়, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘকে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, রোহিঙ্কা সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও বাংলাদেশ আলোচনা করেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উপর জোর দেন।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘ কাজ করছে বলে জানান তিনি।
রোহিঙ্গা সমস্যা এখন আমাদের দেশের জন্যেও বড়সড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। মিয়ানমার এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারছে না।
এ সময় তাই আন্তর্জাতিক মহল থেকে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করা উচিৎ, যেন এই মানুষগুলো তাদের আবাসস্থল ফিরে পায়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply