
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে সকলেই ছাত্র কী-না, সে সম্পর্কে দ্বিধা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষকদের মনে।
রোববার থেকে শুরু হওয়া নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষাথীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বৈঠক ডাকেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
উক্ত বৈঠকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে অভিভাবকদের নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোর পরিচালনা পর্যদের সভাপতিকে ভূমিকা রাখারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট বন্ধ করা, পরিবহন শ্রমিকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করানোর পরামর্শ রেখেছেন কলেজপ্রধানরা।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা আট দিন ধরে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ায় ঢাকা মহানগরীর সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের প্রধানদের নিয়ে রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সভা হয়।
সভায় সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষক কানিজ মাহমুদ আক্তার বলেন, “অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের যেন ঝামেলা না হয় সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।”
নজরুল শিক্ষালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা জাহান বলেন, “যেসব শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হবে না তাদের চিহ্নিত করতে হবে। নতুন পোশাকে সবাই ছাত্র কি না তাও সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।”
স্কুল-কলেজের পোশাকে আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সবাই শিক্ষার্থী নয় বলে কয়েকজন অধ্যক্ষ তাদের সন্দেহের কথা জানান।
হাজী মকবুল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল হাসান বলেন, “(শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ) এটা খেলা হিসেবে নিয়েছে, কারণ কলেজও কিছু বলছে না, কেউ কিছু বলছে না।
“শিক্ষার্থীরা যেখানে যেখানে আন্দোলন করছে সেখানে গিয়ে তাদের কনভিন্স করা যেতে পারে। আমরা দাঁড়ালে কোনো শক্তিই আর কাজ করবে না, এ বিষয়ে আমরা অনুমতি চাই।”
যেসব শিক্ষার্থী কলেজে অনুপস্থিত থাকছে তাদের অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি জানানোর পরামর্শ রাখেন ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান খান।
অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের সময় শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার দাবিও জানান তিনি।
যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের আলাদা করে ডেকে কাউন্সিলিং করার পরামর্শ দেন ঢাকা কমার্স কলেজের শফিকুল ইসলাম।
পরিবহন শ্রমিকরা যেন শিক্ষার্থীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করেন সে বিষয়ে তাদের কাউন্সিলিং দেওয়ার পরামর্শ দেন এ কে এম রহমতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় নয় দাবি করে ধানমণ্ডির আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি এলাকায় ‘শান্তি শিবিরের’ ব্যবস্থা করার পরামর্শ রাখেন। ইস্পাহানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কিছু দিন ফেইসবুক বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন।
বেশিরভাগ অধ্যক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফেরাতে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদের সভাপতিকে ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের ডেকে কথা বলার পরামর্শ তাদের।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply